বাংলা চলচ্চিত্রের গানের ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক স্পর্শ করলো রায়হান রাফীর পরিচালনায় নির্মিত সিনেমা তুফান–এর গান “দুষ্টু কোকিল’’। ইউটিউবে গানটির ভিউ ইতোমধ্যে ৫০ কোটি ছাড়িয়েছে, যা দেশীয় বাংলা সিনেমার গানে সর্বোচ্চ ভিউয়ের নতুন রেকর্ড।গানটি প্রকাশের পর থেকে চরকির ইউটিউব চ্যানেলে ভিউ দাঁড়িয়েছে ৩৪ কোটি ৯৯ লাখ ৪৮ হাজারের বেশি, আর এসভিএফের চ্যানেলে এটি ১৫ কোটি ৯ লাখ পার করেছে। এই পরিসংখ্যান শুধু গানটির জনপ্রিয়তাই নয়, বাংলা গানের আন্তর্জাতিক আবেদনকেও তুলে ধরে।
২০২৪ সালের ২০ জুন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে মুক্তি পাওয়া তুফান সিনেমার এই গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন শিল্পী দিলশাদ নাহার কনা এবং কলকাতার আকাশ সেন। গানটির সুর ও কথা দুটোই করেছেন আকাশ সেন। ভিডিওতে দেখা যায়, মিমি চক্রবর্তী একটি পানশালায় পারফর্ম করছেন, আর তাঁকে দেখে প্রেমে পড়েন নায়ক শাকিব খান।
গানটি নিয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন সঙ্গীতশিল্পী আকাশ সেন। তিনি কলকাতা থেকে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় বলেন, “দেখুন, একদিন আমি থাকব না। গানটা থাকবে। এত মানুষের ভালোবাসার উত্তর দেওয়ার ভাষা আমার নেই। গানটি শুধু বাংলাদেশে নয়, কলকাতাসহ ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মানুষও পছন্দ করেছেন। এমনকি ব্যাংকক থেকেও বন্ধুরা কল করে জানিয়েছেন, সেখানকার নানান পার্টিতে এ গান বেজেছে। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে।’
গানটির জন্ম নিয়ে এক মজার তথ্য দিয়েছেন আকাশ সেন। তিনি বলেন “আমার বাড়ির পাশে একটি আমগাছ আছে। বসন্তকালে সেখানে সারা দিন কোকিল ডাকাডাকি করে। এক কোকিল আরেক কোকিলকে মুগ্ধ করতেই এভাবে ডাকাডাকি করে। এভাবে সবার সামনে কোকিল প্রেম নিবেদন করে বলেই তাকে দুষ্টু বলা হয়েছে। এই মজা থেকেই গানের জন্ম”।
আসলে গানটি শুরুতে অন্য একটি সিনেমার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। তবে সেই সিনেমার প্রযোজকের অপছন্দের কারণে আকাশ সেটি নিজের কাছে রেখে দেন। পরে গায়িকা কনা গানটি তুফান পরিচালক রায়হান রাফীকে শুনালে তিনি তা সিনেমার জন্য বেছে নেন।
গানটির সাফল্যের কৃতিত্ব দর্শকদের দিতেও ভোলেননি আকাশ সেন। তিনি বলেন, “‘জীবনে প্রথম গান যখন বানিয়েছিলাম, সেদিনও মনে হয়েছিল, একটা মঞ্চে দাঁড়িয়ে অনেক শ্রোতাকে গানটি শোনাচ্ছি। শ্রোতারা নতুন গানটি শুনে রোমাঞ্চিত হচ্ছেন। তো আমি যে গানই বানাই না কেন, পরিচালক-প্রযোজক থেকে হয়তো আইডিয়াটা নিই, কিন্তু আমার সামনে থাকেন সেই লাখো কোটি শ্রোতা; তাঁদের আবেগ, পছন্দই আমার মাথায় কাজ করে। গানটির মাধ্যমে এত শ্রোতার কাছে যে আমি পৌঁছাতে পেরেছি, এটাই আমার কাছে বড় আনন্দের”
গানটির শুটিং হয়েছিল কলকাতায়। শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে আকাশ সেন জানান, “শুটিংয়ের দুই দিন আগেই রায়হান রাফী আমায় নিমন্ত্রণ করেন। শাকিব ভাইকে মেসেজ করে দেখা করি। তার সঙ্গে সারা দিন কাটে। তিনি যে স্নেহ ও ভালোবাসা দিয়েছেন, সেটা সারাজীবন মনে রাখব।”
গানটির অভূতপূর্ব সাফল্যে আবেগাপ্লুত শিল্পী কনা। তিনি বলেন, ‘অনেক আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ। এটি অনেক বড় আনন্দের খবর। এই গান বাংলা সিনেমার গানে নতুন মাত্রা দিয়েছে। সব শ্রোতার প্রতি অনেক অনেক ভালোবাসা। এই পুরো কৃতিত্ব আপনাদের।’বাংলা গানের ইতিহাসে “দুষ্টু কোকিল” আজ শুধু একটি গান নয়, এক যুগান্তকারী সংযোজন। দেশীয় সঙ্গীতে নতুন দিগন্তের সূচনা করলো এই সৃষ্টিশীল প্রয়াস।
তারিখ
Subscribe to Updates
Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.
Previous Articleনোবেল ইস্যুতে মুখ খুললেন গায়কের সাবেক স্ত্রী সালসাবিল